আব্দুল আলীম নোবেল :

নারীর মানবিক গুণাবলিই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই শক্তি ব্যবহার করে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারলে তবেই সমাজে নারীর অবস্থান শক্ত হবে। এমন একজন মানবিক নারীর কথাই বলছি। কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলার কুতুবদিয়ার মাতব্বর বাড়ির বড় সন্তান ফাতেমা আনকিছ ডেইজী। নোনাজলে বেড়ে ওঠা তার শিশু কিশোর জীবন। অসহায় নির্যাতিত মানুষের কল্যাণে পথচলার দুই যুগ ধরে কাজ করছেন নারীদের অধিকার নিয়ে তিনি। তার বাবা মরহুম আলহাজ আবু তাহের মাতাব্বার। তাহার বাবা ছিলেন ওই এলাকার জমিদার বাড়ির সন্তান। জমিদার বাড়ির সন্তান হলেও গরিব অসহায় মানুষকে তিনি সবসময় ভালবাসতেন এবং নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতেন। ডেইজীও বাবাকে অনুসরণ করে জীবন শেষ করতে চায় অসহায় মানুষের পাশে থেকে। ফাতেমা আনকিছ ডেইজী কক্সবাজার সদর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা। তিনি পেশায় একজন সরকারী চাকুরীজীবি হলেও বাবার মতো মানুষের কল্যাণে কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। বর্তমানে কক্সবাজার শহরে ৩০ বছরেরও বেশির সময় ধরে বসবাস করছেন তিনি। গড়ে তুলছেন ঝাউতলা নারী কল্যাণ সমবায় সমিতি। তিনি ওই সমিতির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিলে তিলে গড়ে তোলা এই সমিতিতে বর্তমানে সাড়ে তিন হাজার নারী সদস্য রয়েছে। বিশাল সংখ্যক নারীদের পাশে দাঁড়াতে কোন দিন অবহেলা করেনি। নির্যাতিত নারী, অসহায়, মেহনতি মানুষের পাশে থেকে সৎ সাহসকিতা নিয়ে প্রতিবাদের ভাষায় বার বার জেগে ওঠেছে। এই সমিতির ব্যানারে ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি অসহায়দের পাশে থেকেছে সবসময়। নানা সময়ে বিভিন্ন এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্পম, খাদ্যা বিতরণ, কাপড় বিতরণ, ঈদ মৌসুমে শিশুদের ও অসহায়, বিধাবা নারীদের সাহয্য সহযোগিতা করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও তাহার উদ্যোগে নানাভাবে সাহয্য সহযোগিতা করেছেন। বিশেষ করে নির্যাতিত নারীদের বিচার পেতে সবার আগে এগিয়েছেন এই নারী। তার ভাষ্যমতে এক হাজারেও বেশি নির্যতিত নারীর পাশে দাঁড়িয়েছে দুই যুগে। নির্যাতিত নারীরা তাদের পারিবারিক বন্ধন ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে অনেকর জন্য গিয়েছেন তিনি। তার কারণে অনেক নারীই ফিরে পেয়েছে স্বপ্নের সুখের নীড়। সমাজসেবা ও মানবিক কাজের কল্যাণে অবদান রাখাই ৩য় বারের মতো সমবায় পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি। আরো একাধিক পুরষ্কারের ভ’ষিত হয়েছেন এই নারী। সবার আগে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে তিনি বেশি ভালবাসেন। আজীবন তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করে জীবন শেষ করতে চাই।